নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার এক মাসের মধ্যে, বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের কাছে ১০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। গত সপ্তাহে পাঠানো চিঠিতে, এই অর্থ জ্বালানি খাতে ব্যয় করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) দুই কিস্তিতে ৫০ কোটি ডলার করে বাজেট সহায়তা চাইছে।
ইআরডির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, বাজেট সহায়তা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সপ্তাহে বিশ্বব্যাংকের একটি দল যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের প্রধান কার্যালয় থেকে ঢাকা আসবে। দলটি অর্থনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করবে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহে বিশ্বব্যাংকের উচ্চপর্যায়ের একটি মিশন সম্ভাব্য বাজেট সহায়তা ও সংস্কারের অগ্রাধিকার নির্ধারণের বিষয়ে আলোচনা শুরু করবে।
প্রসঙ্গত, সরকার ১০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তার জন্য আবেদন করলেও, কতটুকু সহায়তা পাওয়া যাবে তা দর-কষাকষির ওপর নির্ভর করবে। সাধারণত, বহুজাতিক সংস্থাগুলোর শর্তে রাজস্ব ও ব্যাংক খাত সংস্কার, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইনি সংস্কার, ভর্তুকি কমানো, করছাড় হ্রাসসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় ধরনের সংস্কারের প্রয়োজন হয়।
২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকার ৫০ কোটি ডলারের বাজেট সহায়তার জন্য বিশ্বব্যাংককে প্রস্তাব দিয়েছিল, তবে সেই সহায়তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
এদিকে, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী এলাকায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধির জন্য ৪০ কোটি ডলার সহায়তার দর-কষাকষি চলছে। এডিবি থেকে সহায়তা পেলে, তা প্রাপ্তির পর এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) ও কোরিয়া থেকে অতিরিক্ত ৩০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে।
দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে চাপ বেড়ে যাওয়ার কারণে, সরকার বাজেট সহায়তা পেতে আগ্রহী। এক-দেড় বছর ধরে ডলার প্রাপ্তির প্রধান উৎস রপ্তানি আয়, প্রবাসী আয় ও বিদেশি ঋণ ছাড়াও বাজেট সহায়তা পাওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় বেশি মনোযোগী। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকেও ঋণ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু এক বছরে রিজার্ভ কমেছে এক হাজার কোটি ডলার।
গত পাঁচ বছরে, এডিবি, বিশ্বব্যাংকসহ বিভিন্ন ঋণদাতা সংস্থার কাছ থেকে ৮০০ কোটি ডলারের বেশি বাজেট সহায়তা পাওয়া গেছে। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৭৫ কোটি ডলার সহায়তা এসেছে, যেখানে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ২৬০ কোটি ডলার পাওয়া গিয়েছিল।