সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্পেন সফর বাতিল হয়েছে, যা বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এবং প্রভাবশালীদের দেশ ছাড়তে বাধা সৃষ্টি করেছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজের আমন্ত্রণে মাদ্রিদে সফরের পরিকল্পনা ছিল, যা কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে ২১ জুলাই পেছানো হয়।
এর আগে, চীন সফর সংক্ষিপ্ত করে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। কিন্তু স্পেন সফরে যাওয়ার সুযোগ আর হয়নি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লেও, তার সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও ব্যবসায়ীরা দেশের বাইরে যেতে পারেননি। তাদের পাসপোর্ট স্পেন সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে জমা ছিল এবং হঠাৎ সরকার পতনের কারণে তারা পাসপোর্ট না পাওয়ায় বিদেশে যেতে পারছেন না।
একটি অনলাইন পোর্টাল জানায়, স্পেন সফরের জন্য ভিসার আবেদন করতে ১৪০ জন প্রভাবশালী রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী নেতার পাসপোর্ট জমা ছিল। এই তালিকায় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব, কর্মকর্তা, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত ছিল।
৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ছাত্র-জনতার হামলা ও ভাঙচুর ঘটে, যার ফলে অনেক পাসপোর্ট হারিয়ে যায়। নিরাপত্তা বেষ্টনি ভেঙে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর ভেতরে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়। এই লুটপাটের কারণে প্রভাবশালীদের পাসপোর্ট নিখোঁজ হয়ে যায়, ফলে তারা আত্মগোপনে চলে যান অথবা সেনাবাহিনীর আশ্রয় নেন। ক্যান্টনমেন্টে ছয় শতাধিক ব্যক্তি আশ্রয় নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র অনুযায়ী, পাসপোর্ট না থাকায় সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, জুনায়েদ আহমেদ পলক, দীপু মনি সহ অনেক প্রভাবশালী ব্যক্তি দেশ ছাড়তে পারেননি। তাদের পাসপোর্ট হারিয়ে যাওয়ার কারণে তারা সীমান্ত পার হতে পারছেন না। অনেকের পাসপোর্টের অবস্থান এখনও অজানা, যার কারণে তারা এখনো দেশ ছাড়তে পারছেন না।