জামালপুরে সরকার পতনের পর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সহিংসতা ও দখলদারি

 

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর জামালপুরে রাজনৈতিক উত্তেজনা ও সহিংসতার মাত্রা বেড়ে গেছে। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা বাসস্ট্যান্ড, সিএনজি স্ট্যান্ড, বাজার, এবং বালুমহালসহ বিভিন্ন স্থাপনা বিএনপির নেতা-কর্মীরা দখল করতে শুরু করেছেন। এই পরিস্থিতিতে বালুমহাল ও পরিবহন খাত থেকে চাঁদার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা চলছে।

জেলা সদরসহ সাতটি উপজেলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা আওয়ামী লীগের লোকজনের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালান। সবচেয়ে বেশি সহিংসতা দেখা গেছে সদর উপজেলায়। এ সময় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে বালুমহাল দখল নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

বালু ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন জানান, ৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা বালু ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বালুমহাল দখলে নিয়েছেন এবং আওয়ামী লীগের লোকজনের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করছেন। তিনি জানান, ছনকান্দা বালুমহালের ইজারাদার মেসার্স হাজী এন্টারপ্রাইজের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভাগাভাগি নিয়ে দর-কষাকষি চলছে।

১৮ আগস্ট শরিফপুর ইউনিয়নের জয়রামপুর এলাকায় একটি বালুমহাল দখল নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহ্বায়ক রেজাউল করিমের ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়।

রেজাউল করিম অভিযোগ করেন, “বালুর ঘাটগুলো এখন জেলা বিএনপির নেতাদের নিয়ন্ত্রণে। আমার ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে।” তবে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “আমাদের লোকজনের সঙ্গে কোনো সংঘর্ষ হয়নি। বালুমহালের ইজারাদারদের সঙ্গে কিছু ঘটনা ঘটেছে, তবে আমাদের কেউ সেখানে যায়নি।”

এই পরিস্থিতি রাজনৈতিক উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতার একটি বড় চিত্র তুলে ধরছে, যা সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রভাব ফেলছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *