**মিয়ানমারের অর্থনৈতিক সংকটে কিডনি বিক্রি: মানবিক বিপর্যয়ের নতুন অধ্যায়**
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমার বর্তমানে একটি ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি। দেশটির জান্তা বাহিনী এবং বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলমান সংঘর্ষের কারণে নাগরিকদের জীবন কঠিন হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৭ সাল থেকে দারিদ্র্যের হার দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।
এই সংকটের ফলে অনেক মিয়ানমারবাসী তাদের জীবন বাঁচাতে কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। সম্প্রতি সিএনএন একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, অর্থের অভাবে কিডনি বিক্রির একটি notable উদাহরণ হলো মং মং। তিনি একজন গাড়িচালক যিনি সেনাবাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর আর্থিক সংকটে পড়েন। ঋণ পরিশোধের জন্য তিনি ফেসবুকে কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন এবং পরে ভারতে গিয়ে ৩০৭৯ ডলারের (৩.৫ লাখ টাকা) বিনিময়ে তার কিডনি বিক্রি করেন।
মং মং জানান, “২০২২ সালে জীবন ছিল অত্যন্ত কঠিন। অর্থের অভাবে আমি অন্য কোনো পথ খুঁজে পাইনি। শুধু আমার মেয়ের কথা চিন্তা করে আমি এবং আমার স্ত্রী বেঁচে আছি।”
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মং মং কিডনি বিক্রির প্রস্তাব প্রথম দেন ২০২২ সালের শেষের দিকে ফেসবুকে। পরবর্তীতে, ২০২৩ সালের মে মাসে তিনি ইয়াঙ্গুনে এসে একটি চীনা-বার্মিজ ব্যবসায়ীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। জুলাই মাসে, তারা ভারতের দিল্লিতে গিয়ে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি সম্পন্ন করেন।
তদন্তে আরও দেখা গেছে, মিয়ানমারের নাগরিকরা ফেসবুকে ধনী ব্যক্তিদের কাছে তাদের অঙ্গ বিক্রির প্রস্তাব দিচ্ছেন। একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যক্তির মতে, “শরীরের অংশ বিক্রি করা প্রত্যেকের জন্য একটি কঠিন সিদ্ধান্ত। আমি এটা করছি কারণ আমার আর কোন বিকল্প নেই।”
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, অনেক দেশে শরীরের অঙ্গ বিক্রি নিষিদ্ধ। সিএনএন অন্তত তিনটি ফেসবুক গ্রুপের সন্ধান পেয়েছে যেখানে কিডনি বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। এসব গ্রুপের সাথে জড়িত দুজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, অর্থের অভাব তাদের এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।