ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) শনিবার রাতভর তিন দফায় হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার পর থেকে রোববার সকাল থেকেই জরুরি বিভাগের চিকিৎসাসেবা বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তারা হামলাকারীদের আটক ও শাস্তি নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি সারা দেশে চিকিৎসক ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য দুই দফা দাবি জানিয়েছেন।
চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া এবং দোষীদের গ্রেপ্তার না করার কারণে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য দেশের সকল চিকিৎসাকেন্দ্রে কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আব্দুল আহাদ এই পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জানান।
তিনি বলেন, শনিবার রাতে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন হামলার মধ্যে আমাদের তিন চিকিৎসককে নিউরো সার্জারি বিভাগ থেকে মারধর করে প্রশাসনিক ব্লকের পরিচালকের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরপরই বহিরাগতরা এসে হাসপাতালে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) ভাঙচুর চালানো হয়। চিকিৎসকরা উদ্বিগ্ন যে, এই ধরনের হামলা চলতে থাকলে তাদের নিরাপত্তা কোথায়, এবং রোগীদের কীভাবে সেবা দেবেন।
চিকিৎসকরা দাবি করেছেন, অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল উপজেলা ও জেলা সদরসহ অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে সেনাবাহিনী মোতায়েন করতে হবে। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে স্বাস্থ্য পুলিশ নিয়োগেরও দাবি জানানো হয়।
নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. শাহনেওয়াজ বিশ্বাস বলেন, “আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে নয়, শুধুমাত্র আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। রাজনৈতিক কোনো দল এখানে ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে না।”
তিনি আরো বলেন, “চিকিৎসাসেবা প্রদান আমাদের পেশা এবং নেশা। দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতেও আমরা জীবন ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিচ্ছি। আমরা সেবা দিতে ভালোবাসি, কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।”
শনিবার মধ্যরাতে খিলগাঁও সিপাহীবাগ এলাকায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহতরা ঢামেকে আসেন। সংঘর্ষের পর অন্য একটি গ্রুপ জরুরি বিভাগের ভেতরে প্রবেশ করে। কর্তৃপক্ষ সেনাবাহিনীকে খবর দিলে চারজনকে আটক করা হয়। এছাড়া, অন্য একটি রোগীর মৃত্যুর পর তার স্বজনরা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালান।
নিরাপত্তাহীনতার কারণে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে চলে যান।