পাঁচ তারকা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালেও ছিল ‘আয়নাঘর’

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর রুনি মিলনায়তনে শুক্রবার অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকার অন্যতম বিলাসবহুল হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল (পূর্বে শেরাটন হোটেল) সম্পর্কে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। চাকরিচ্যুত কর্মচারীরা দাবি করেছেন, হোটেলটির অভ্যন্তরে একটি ‘আয়না ঘর’ নামে পরিচিত নির্যাতন কক্ষ ছিল, যেখানে কর্মচারীদের অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হতো এবং তাদের চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হতো।

চাকরিচ্যুত কর্মচারীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন নূরুজ্জামান। তিনি জানান, শাহবাগে অবস্থিত ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দ্বিতীয় তলায় প্রশাসনিক ব্লকের মধ্যে ‘আয়না ঘর’ নামে পরিচিত একটি নির্যাতন কক্ষ ছিল। এখানে কর্মচারীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত অমানবিকভাবে নির্যাতন করা হতো এবং অনেককে চাকরি থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হতো। বেতন-বাতিলের পাশাপাশি কর্মচারীরা দীর্ঘ সময় ধরে পণ্য বা সুবিধা না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন।

নূরুজ্জামান আরও জানান, ২৮ আগস্ট ছাত্রসমাজের সহায়তায় হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু আলোচনার পরিবর্তে, নূরুজ্জামানকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়। তিনি দাবি করেন, রমনা থানার ওসি তাকে আন্দোলন থেকে সরে যেতে চাপ দিয়েছিলেন এবং তার সাথে দুর্ব্যবহার করা হয়। পুলিশ তাকে গুম করার মতো আচরণ করেছে।

তিনি বলেন, তার পরিবার ও সহকর্মীরা দীর্ঘ সময় ধরে ডিবি কার্যালয় এবং রমনা থানার সামনে ঘুরে বেড়ান, কিন্তু কোনো সঠিক তথ্য পাননি। শেষে ন্যায়সঙ্গত চাপের মুখে নূরুজ্জামানকে মুক্তি দেওয়া হয়, তবে তার মুক্তির ব্যাপারে কোনো সঠিক তথ্য প্রদান করা হয়নি।

নূরুজ্জামান ও তার সহকর্মীরা প্রশ্ন তুলেছেন, স্বাধীনতার পর এই দেশে তারা কী ধরনের সরকারি অফিসের আচরণ দেখছেন। তিনি বলেন, “আজ আমাদের মাথা লজ্জায় নিচু হয়ে যায়। এটা কোন দেশ, যেখানে আমরা স্বৈরাচার মুক্তির পরেও এমন আচরণের শিকার হচ্ছি?”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *