শিশু মোহাম্মদ ইব্রাহিম জাবিরের কাছে স্বাধীনতা শব্দের প্রকৃত বা ভাবগত গুরুত্ব বুঝার বয়স ছিল না। মাত্র ৬ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে যাওয়ার কারণে ৫ আগস্টের বিজয় উল্লাস তার জীবনে পূর্ণতা পায়নি। উত্তরা পূর্ব থানা থেকে একটি বুলেট হঠাৎ করে থামিয়ে দেয় ছোট্ট জাবিরের সুন্দর জীবন।
বিজয় উদযাপনের দিন বাবা-মায়ের সাথে ঘোরাঘুরি করতে বের হয়েছিল জাবির। কিন্তু নির্মম পরিহাসে, একটি বুলেট তার জীবনের প্রদীপ নিভিয়ে দেয়। এখন সন্তান হারানো বাবা-মায়ের একমাত্র আশা, বৈষম্যহীন ও সুন্দর একটি বাংলাদেশ।
জাবিরের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, শিশুটির শূন্যতা পূরণে তার স্মৃতির ছড়াছড়ি। মাত্র ৬ মাস আগে স্কুলে যেতে শুরু করেছিল জাবির। তার পরিত্যক্ত খেলনাগুলি যেনো সারা জীবনের অভিমান নিয়ে পড়ে আছে, সাইকেলটি যেনো অপেক্ষা করছে, এই বুঝি জাবির ফিরে আসবে।
জাবিরের মা এখনো কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। গণ অভ্যুত্থানের দিনে সবাই বিজয়ের আনন্দে মেতে উঠলেও, জাবিরের মা ফিরেছেন শূন্য হাতে।
জাবিরের মা বলেন, “বুলেট আঘাত হানার পর আমি শুধু তাকে বলছিলাম, ‘বাবা, চোখ বন্ধ করো না’। কিন্তু হাসপাতালে নেওয়ার পর ডাক্তার একটি ইনজেকশন দেয়ার পরই সে চোখ বন্ধ করে চলে যায়।”
জাবিরের বাবা একই শোকে ভেঙে পড়েছেন। তবুও, তারা দেশের সংহতি চান এবং পুরনো ব্যবস্থার সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেন। শোকার্ত মা আশা করেন, আগামীর বাংলাদেশ হবে নিরাপদ, যেখানে আর কোনো মায়ের বুক খালি হবে না।
সন্তানহারা পরিবারের কাছে পুরো দেশটাই যেনো এখন তাদের পরিবার। তারা আশা করেন, প্রিয়জনের রক্তে কেনা এই সম্ভাবনা যেনো অপমৃত্যু না ঘটে।