ভারতের মণিপুর রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। সেপ্টেম্বর মাসে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং অন্যান্য সহিংসতার ঘটনায় রাজ্যে এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থার প্রতিক্রিয়ায়, রাজ্য সরকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মণিপুর সরকার মঙ্গলবার দুপুর ৩টা থেকে আগামী পাঁচ দিনের জন্য (১৫ সেপ্টেম্বর দুপুর ৩টা পর্যন্ত) রাজ্যের পুরো অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে। এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা জারি করে সরকার জানিয়েছে যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়ার ফলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া, রাজ্যের তিনটি জেলায়—ইম্ফল পূর্ব, ইম্ফল পশ্চিম, এবং থৌবল—কারফিউ জারি করা হয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে একের পর এক সহিংস ঘটনা ঘটার পর, প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যদিও ইম্ফল পূর্ব ও পশ্চিমের জেলাশাসক আগেই কারফিউ শিথিল করার ঘোষণা দিয়েছিলেন, কিন্তু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মঙ্গলবার দুপুর ১১টা থেকে পূর্ববর্তী নির্দেশিকা বাতিল করা হয়েছে। এখন থেকে নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী দুই জেলায় সম্পূর্ণ কারফিউ জারি করা হয়েছে, তবে জরুরি পরিষেবাগুলো এর আওতার বাইরে থাকবে। থৌবল জেলায়ও রোববার থেকে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার আইনে কারফিউ ঘোষণা করা হয়েছে এবং পাঁচজন বা তার বেশি সংখ্যক মানুষের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সেপ্টেম্বর মাসে মণিপুরের পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ড্রোন হামলা, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং পুলিশের অস্ত্রাগার লুটের চেষ্টা—এসব ঘটনায় অন্তত আটজন নিহত হয়েছে এবং ১২ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছে। সম্প্রতি এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে, যাকে দু’দিন আগে অপহরণ করা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
মণিপুরের বর্তমান পরিস্থিতির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে শিক্ষার্থীরা। সোমবার ইম্ফলের রাস্তায় স্কুলের পোশাক গায়ে প্রচুর ছাত্রছাত্রী প্রতিবাদ জানিয়েছে। তারা সহিংসতার বিরুদ্ধে এবং স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে মিছিল করেছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা