পানিবণ্টনে ভারত রাজি না হলে যে কড়া পদক্ষেপ নিবে বাংলাদেশ

 

ঢাকা, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪: বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, তিস্তা ও গঙ্গার পানিবণ্টন বিষয়ে ভারতের সাথে আলোচনা পুনরায় শুরু করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। তবে, যদি বন্ধুত্বপূর্ণ সমাধান সম্ভব না হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক আইনের দ্বারস্থ হতে পারে বাংলাদেশ।

পিটিআইকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার ভারতীয় অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা পুনরায় শুরু করতে চায়। তিনি আরও জানান, যদি চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব না হয়, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নীতিমালা ও আইনের সাহায্য নিতে পারে। “আমরা তিস্তার পানি বণ্টনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীদারের সাথে আলোচনা করেছি এবং প্রক্রিয়া ও সংলাপ পুনরায় শুরু করতে হবে,” বলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিস্তা নদী ৪১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ, ভারতের সিকিম ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ভারতের গজলডোবায় একটি বাঁধ দিয়ে পানি প্রত্যাহার করার কারণে পানিবণ্টন চুক্তির অভাবে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। ১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানিবণ্টন চুক্তির আলোকে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করার চেষ্টা হলেও তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “তিস্তার পানিবণ্টন একটি আন্তর্জাতিক পানি সমস্যা, যা অন্যান্য দেশের আইনগত অধিকারের বিবেচনাও নেয়। সুতরাং, পানির পরিমাণ এবং তা পর্যাপ্ত কিনা তা আমাদের কাছে স্পষ্ট নয়। আন্তর্জাতিক পানিবণ্টন নিয়মের কারণে বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহ অব্যাহত রাখতে হবে।”

২০২১ সালের ডিসেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে বৈঠককালে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে পানিবণ্টন বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল, তবে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর বিরোধিতার কারণে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছিল, কিন্তু তা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি। “আমরা সেই খসড়া দিয়েই আলোচনা শুরু করব এবং ভারতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাব,” বলেন তিনি।

আগামী দুই বছরের মধ্যে গঙ্গা চুক্তি সম্পন্ন করার ওপরও গুরুত্ব আরোপ করেছেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *